হেই পয়েন্ট থেকে নোঙর তুলে শান্ত কোরাল সাগরের বুক চিঁরে তিমোর সাগরকে পেছনে ফেলে দীর্ঘ ১৬ দিনের ক্লান্তিকর যাত্রাপথের অধিকাংশ সময়ই অনিন্দ্যর কেটেছে শুয়ে বসে। হয় সেই গতানুগতিক ইঞ্জিন রুমের প্রাত্যহিক কাজহীন রুটিন ডিউটি নয়তো ডেকে দাঁড়িয়ে নোনতা এলোমেলো হাওয়ায় অনাবিল ভেসে যাওয়া। যখনই অকুল সাগরে ভাসে, অনিন্দ্যর নিজেকে যেন বাসা হারানো পাখীর মত মনে হয়। শুধুই উড়ে যাওয়া ক্লান্ত পাখা মেলে, জানা নেই গন্তব্য। সেই ছোটবেলা থেকেই অনিন্দ্যর শখ দেশ বিদেশ ঘোরার। ক্লাস সিক্সে সাহারা মরুভূমির কথা পড়ে চোখ বুজে কল্পনাও করে নিয়েছিল বড় হয়ে ঠিক একদিন ও গায়ে জোব্বা আর মাথায় ফেট্টি বেঁধে উটের পিঠে ঘুরে বেড়াবে মরুভূমির ধূধূ প্রান্তরে। মিশরের নীলনদের পাড় ধরে হেটে যাবে, না:! অনন্যা নয়, ওর সেই সময়ের স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা, স্কুলের নতুন অঙ্ক মিস প্রিয়াঙ্কা ম্যামের হাত ধরে। আর আজ অনিন্দ্য মিশরে এসে নীলনদ খুঁজেই পায় না, খুঁজতে চায়ও না হয়তো। ধুলোয় আকাশ ঢেকে দেওয়া বন্দরের কনভেয়ার বেল্টের যান্ত্রিক আওয়াজে চাপা পড়ে যায় নীলনদের ছলাৎ ছল। প্রাচীন ইন্দোনেশিয়াকে পেছনে ফেলে জাহাজ কখন জাভা সাগরের কোলঘেঁষা মালয়েশিয়াকে অবজ্ঞা করে ঝকঝকে আধুনিক সিঙ্গাপুরে নোঙর ফেলল তার খবরও আর রাখে না। আজকের জীবনটা আর ছোটবেলার দেশ ঘোরার স্বপ্নালু বেহিসেবী নয় নটিক্যাল মাইলের গাণিতিক হিসেবে বাঁধা। প্রায় তিন হাজার আটশো নটিক্যাল মাইল নোনাজলে প্রপেলারের ঝড় তুলে জাহাজ সিঙ্গাপুরের বাঙ্কারিং জেটিতে নোঙর ফেলতেই অনিন্দ্যর স্মার্ট ফোনে দেখা দিল নেটওয়ার্ক টাওয়ার।
The Cafe Table is self-describing in itself. It’s just cafe with a table, where a table is all you need to share your thoughts and shape them into real good books. We are a budding organization based out of Kolkata, seeking to broaden our horizon beyond printing. Though we claim to be a startup publishing house, our line of business has much more than just printing in its palette.