Description
"সে প্রায় বছর পঞ্চাশ - ষাট হবে। আমি তখন বালক থেকে কৈশোরে উত্তীর্ণ হবো হবো করছি।
কাশীতে, বাবা গরমের ছুটির সময় কিছুদিন কাকার বাড়ি শ্রীরামপুরে কাটিয়ে চলে আসতেন আমাকে আর মাকে সাথে নিয়ে, সঙ্গে কাকা ।
এখানে, ঠাকুরদার বাড়ি তো ছিলই। ইলেকট্রিক ছিল না।
গরমের চোটে, আমরা একদম নীচের ঘরে মেঝেতে শুয়ে থাকতাম একটা করে বালিশ নিয়ে।
ঠিক বিকেল চারটের সময়, বাবাদের বন্ধু মণি বাগচী আসতেন চা খেতে।
গরম তাঁকে স্পর্শ করতে পারতো না। হাতে ছাতার বাঁটের মত লাঠি।
ফতুয়ার পকেটে, একটা পেঁয়াজ থাকতো যাতে লু না লাগে।
কট্টর নিরামিষাশী এবং অবিবাহিত এই মণি জ্যাঠা পেঁয়াজ রসুন, কিন্তু কিছুই খেতেন না।
গল্পে ওস্তাদ এই ভদ্রজন, অনেক কিছুই করেছিলেন বলে দাবী করতেন।
গান্ধীজীর অহিংস আন্দোলন করার পরামর্শ, মণি জেঠুরই।
ঘনাদা সিরিজ লেখার জন্য তিনি কাশীর কেদার ঘাটের সিঁড়িতে বসে পরামর্শ দিয়েছিলেন, প্রেমেন বাবুকে।
পঙ্কজ মল্লিকের প্রথম সঙ্গীত গুরু তিনি।
রবি বাবুর নোবেল পাওয়ার (১৯১৩) পেছনে মণি জেঠুর হাত ছিল। যদিও মণি বাবুর জন্ম ১৯২৬ সালে।
রাতে আড্ডা হতো, কাশীর তখনকার বিখ্যাত বংশী কবিরাজের চেম্বারে।
এই রকম অজস্র গল্প আমি শুনতাম হাঁ করে।
মণি জেঠু নাকি বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন। সেই সময়ের অনেকেই এরকম মজলিসি আড্ডা দিতেন, তুখোড় ভাবে।
পরে বড় হয়ে, ঘনাদা পড়ে আমি মিল খুঁজে পেতাম মণি জেঠুর সাথে।
লেখার সাহস করি নি, কারণ সময়টার সাথে অনেকে রিলেট নাও করতে পারেন আর আমার লেখা ঠিক পাতে দেবার মত হয় বলে মনে করি না।
তবু সাহস করে লিখি ফেলি, সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে।
মণি বাগচী হন ক্ষেতু। বংশী কবিরাজ - চন্দন ডাক্তার।
প্রকাশিতও হয়, নানা ক্ষুদ্র পত্রিকা আর ওয়েবজিনে।
তারই সাতটা এবং আরও পাঁচটি অন্য গল্প নিয়ে সঙ্কলন - অল্পতে গল্প।"